
দুবরাজপুর, শেখ অলি মহম্মদ : চালাকি করেও শেষ রক্ষা হলোনা, টাকা ছিনতাই এর ঘটনায় গ্রেফতার অভিযোগকারী নিজেই । আটক বাবা ও ভাই।
গত ৫ই সেপ্টেম্বর সিউড়ির মেটে গ্রামের মুদিখানা দোকান মালিক সঞ্জীব মন্ডল সিউড়ির কুখুডিহি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় টোটো চালক নাদিম মির্ধাকে দিয়েছিলেন ৫০ হাজার টাকা । তার দোকানের মুদিখানার পাইকারি সামগ্রি কিনে আনার জন্যই। সেই টাকা নিয়ে টোটো চালক যাচ্ছিলেন দুবরাজপুরে। কিন্তু হঠাৎই ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর সাতকেদুরী থেকে পাওয়ার হাউস যাওয়ার রাস্তায় স্কুটি নিয়ে দুই দুষ্কৃতী এসে দাড় করায় নাদিম মির্ধার টোটো। তার গলায় ছুরি ধরে তার কাছ থেকে কেড়ে নেয় দোকান মালিকের দেওয়া ৫০হাজার টাকা এবং তার মোবাইল। ঘটনার পর দুবরাজপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে টোটো চালক নাদিম মির্ধা। অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করে দুবরাজপুর থানার পুলিশ। কিন্তু সেই তদন্ত যত এগোতে থাকে ততই সাজানো ঘটনার ছবি স্পষ্ট হতে থাকে পুলিশের কাছে। রবিবার রাত্রে এই ছিনতাই এর ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় অভিযোগকারী টোটো চালক নাদিম মির্ধা ও তার ভাই আফরোজ মির্ধা, এবং তার বাবা সেখ ইয়াসিনকে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে। সেই সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই পাওয়া যায় ছিনতাই এর সময় ব্যবহার হওয়া স্কুটির নম্বর। এরপরেই পুলিশ পৌঁছে যায় ওই স্কুটির মালিক নূর সেলিমের কাছে। তখন তিনি জানান, স্কুটিটি অন্য একজনকে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। যিনি স্কুটিটি কিনেছিলেন তার কাছেও পৌছায় পুলিশ। তিনিও পুলিশের কাছে দাবী করেন স্কুটিটি কিনে কিছুদিন চালানোর পর অন্য আরেকজনকে বিক্রি করে দিয়েছেন। এরপরে পুলিশ যখন তার কাছে ক্রেতার নাম জানতে চায়। তখন তিনি বলেন, স্কুটিটি তার থেকে কিনেছেন টোটো চালক নাদিম মির্ধা । তখনই এই ছিনতাই এর ঘটনার ছক কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায় পুলিশের কাছে । এরপর রবিবার রাত্রে বাবা ও ভাই সহ টোটো চালক নাদিম মির্ধাকে গ্রেপ্তার করে দুবরাজপুর থানার পুলিশ।

তাদের জেরা করে জানতে পারে ছিনতাইয়ের সময় স্কুটিটি চালাচ্ছিলেন নাদিমের বাবা এবং নাদিমের গলায় ছুরি ধরেছিলেন তারই ভাই আফরোজ। ছিনতাই করা টাকা এবং মোবাইলটি তারা মিনিস্টিলের জঙ্গলে একটি কাপড়ের মধ্যে বেঁধে মাটিতে পুঁতে রেখেছিলেন। সেগুলিও উদ্ধার করে পুলিশ । আজ ধৃত তিনজনকে দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ২ হাজার টাকা বেল বন্ডে অভিযোগকারীকে জামিন দেন। দুবরাজপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্র প্রসাদ দে জানান,’ অভিযোগকারী যিনি নিজেই সেহেতু তিনি অভিযুক্ত হতে পারেন না। সেই জন্যই এই জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত । অন্যদিকে টোটো চালকের বাবা ও ভাইকে ২দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন দুবরাজপুর আদালত।
বিস্তারিত খবর দেখতে ইউটিউবের লিংক নিচে দেওয়া আছে।