রামপুরহাটে দুর্গাপুজোয় সম্প্রীতির অনন্য নজির
রামপুরহাটে দুর্গাপুজোয় সম্প্রীতির অনন্য নজির

রামপুরহাট, আমার খবর : “মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান”—কাজী নজরুল ইসলামের এই লাইন যেন বাস্তব রূপ পেল বীরভূমের রামপুরহাট শহরে। ধর্মীয় বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে রামপুরহাটের ডাকবাংলা সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি গড়ে তুলেছে সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
এই বছর ৭৫ বছরে পদার্পণ করছে এই পুজো। আর এই বিশেষ উপলক্ষে পুজো কমিটির সভাপতি হয়েছেন হায়দার আলি, যাকে সকলে ‘আশা’ নামে চেনেন। শুধু সভাপতি হিসেবেই নয়, পুজোর থিম, আয়োজন—সব কিছুতেই সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। মুসলিম হয়েও হিন্দুদের দুর্গাপুজোয় এমন সম্পৃক্ততা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন এবং প্রশংসনীয়।

শুভ সূচনা খুঁটিপুজোয় বুধবার রামপুরহাট হাইস্কুল মাঠে পুজোর থিম মণ্ডপের খুঁটিপুজো অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রামপুরহাটের পুরপ্রধান সৌমেন ভকত, এসডিপিও গোবিন্দ সিকদার, আইসি সুকোমল ঘোষ সহ প্রশাসনের ও জনপ্রতিনিধিদের একাধিক মুখ।
খুঁটিপুজোয় ছিল মহিলাদের ঢাকের সঙ্গীত, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, সই ব্যান্ডের পরিবেশনা এবং বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। রামপুরহাট শহরের ডাকবাংলা মোড় থেকে হাইস্কুল মাঠ পর্যন্ত এই শোভাযাত্রা উৎসবের আবহ তৈরি করে।
ইন্দ্ররাজ সভায় চমক পুজোর থিম “ইন্দ্ররাজ সভা”। বিশাল মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে ফোম ও কৃত্রিম ফল দিয়ে—প্রায় ৭০ ফুট চওড়া, ৬৫ ফুট লম্বা এবং ৫৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট। পূর্ব মেদিনীপুরের শিল্পী লোকনাথ জানার তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। চন্দননগরের আলোকসজ্জা ও লেজার শো-তে সেজে উঠবে পুরো আয়োজন। পুজোর বাজেট ৭০ থেকে ৭২ লক্ষ টাকা।

সম্প্রীতির বার্তা কমিটির তরফে জানা গিয়েছে, এবারের পূজোয় মুসলিম যুবকদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো হয়েছে। কালীপুজোর সময়ও একই সম্প্রীতির ছবি দেখা গিয়েছে। প্রাক্তন কাউন্সিলর আব্বাস হোসেন, যিনি এলাকায় ‘আব্বাস কালী’ নামে পরিচিত, তিনিও এই দুর্গাপুজোয় সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছেন।
সভাপতি হায়দার আলি ওরফে আশা বলেন, “সকলের অনুরোধে সভাপতি হয়েছি। আমরা চাই সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই পুজোয় আনন্দ করুন। এবারে থিমেই রয়েছে সেই বার্তা—সবার পুজো, সবার আনন্দ।”
বিস্তারিত খবর দেখতে ইউটিউবের লিংক নিচে দেওয়া আছে।