সুরথেশ্বর শিব মন্দিরের গর্ভগৃহ খনন করতে গিয়ে মিলল প্রায় দেড় হাজার বছর পুরনো উমা-মহেশ্বর শিলামূর্তি।
বোলপুর, দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায় : সুরথেশ্বর শিব মন্দিরের গর্ভগৃহ খনন করতে গিয়ে মিলল প্রায় দেড় হাজার বছর পুরনো উমা-মহেশ্বর শিলামূর্তি। আগামীকাল শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার। তার আগে আজ, রবিবার মূর্তির প্রতিষ্ঠা করলেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।
রাজা সুরথের আমল বা তারও আগে থেকে এই শিব মন্দিরের অস্তিত্ব রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন স্থানীয় মানুষ। তবে এবার যা ঘটল তাতে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে এই মন্দির আরও অনেক প্রাচীন। রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্বও।
সুরথেশ্বর শিব মন্দির কমিটির সভাপতি দীনবন্ধু সিংহ এবং সম্পাদক রামকৃষ্ণ ভদ্র জানালেন, এতকাল ধরে অগুনতি ঘড়া জল ঢেলেছেন ভক্তেরা। কখনও জল জমে যাওয়ার সমস্যা হয়নি। কয়েকদিন ধরে তাঁরা লক্ষ্য করছিলেন জল বেরোচ্ছে না। গর্ভগৃহেই থেকে যাচ্ছে। নানান ব্যবস্থা করেও কোনও উপায় হল না। সমস্যার সমাধান হল না। এদিকে শ্রাবণ মাস শুরু হতে চলেছে। শ্রাবণের সোমবার মানেই হাজারে হাজারে ভক্ত সমাগম। তাহলে উপায়! শেষ পর্যন্ত পুরোহিতের মত নিয়ে মন্দির কমিটি থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কী সমস্যা হয়েছে সেটা গর্ভগৃহ খনন করে দেখা হবে।

গর্ভগৃহ খনন করতে গিয়ে দেখা যায় ভেতরে বড় বড় পাথরের চাঁই। পাথর সরাতে প্রয়োজন হয় ছোট ক্রেনের। তারপরেই উমা-মহেশ্বর শিলামূর্তির দেখা মেলে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় পাঠানো হয়েছিল সেটি। সেখান থেকে জানানো হয়েছে প্রায় দেড় হাজার বছরেরও পুরনো এই শিলামূর্তি। এলাকাবাসী মনে করছেন, কোন নির্দিষ্ট কারণেই হয়তো সেই সময়কার পুরোহিতরা মূর্তিটিকে লুকিয়ে দিয়েছিলেন। জাঠ কালাপাহাড়ের মন্দির ধ্বংসের কাহিনী শোনা যায় এই রায়পুর, সুপুর, দেউলি এলাকায়। হয়তো তখনও মূর্তি সরানো হতে পারে কিংবা একসময় এই মন্দিরেরই উত্তর দিক দিয়ে বয়ে যেত অজয় নদ, তার গতিপথ পরিবর্তনের জন্য এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকতে পারে যাতে মাটির তলায় চলে গিয়েছিল আস্ত একটি শিবালয়।

যায় হোক, এত বছর পরে এমন মূর্তির সন্ধান পাওয়া যাওয়ার ঘটনাকে দৈবিক বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ। এদিন মূর্তি প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। তিনি জানালেন, এমন শুভদিনে এলাকাবাসী তথা রাজ্যবাসীর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করলেন।
বিস্তারিত খবর দেখতে ইউটিউবের লিংক নিচে দেওয়া আছে।