
সিউড়ি, দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায় : কখনও মুমূর্ষু রোগীকে প্রাণে বাঁচিয়ে ভগবান হয়ে যান তাঁরা, কখনও আবার রোগীমৃত্যুর জন্য তাঁদেরই দায়ী করে অপদস্থ করা হয় অথবা সত্যিই ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয় কোনও কোনও রোগীর। এমন নানান খবর নিয়ে তো শিরোনাম হয় রোজই। তবে এবার সিউড়ি সদর হাসপাতালে যা হল তা কার্যত নজিরবিহীন। মূক ও বধির এক ভবঘুরে, ভিক্ষুক বৃদ্ধার ভেঙে যাওয়া বাঁ পায়ের জটিল অস্ত্রপচার করে নজির তৈরি করলেন সিউড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। এ বিষয়ে সিউড়ি সদর হাসপাতালের সুপার প্রকাশ চন্দ্র বাগ জানান, অসহায় পরিচয়হীন এই মাকে সুস্থ করতে পারলে তাঁরা খুশি হবেন। আইনের দিক বাঁচিয়েই সবটা করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২১ জুন। ভবঘুরে বৃদ্ধাকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকর্মীরা সিউড়ি সদর হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করিয়ে গিয়েছিলেন। অনেক চেষ্টার পরেও তাঁর কোন পরিচয় কিংবা ঠিকানা পাওয়া যায় নি।

চিকিৎসকেরা দেখেন ওই বৃদ্ধার বাঁ পায়ের উরুর হাড় অনেকটাই ভাঙা। তিনজন চিকিৎসক প্রসন্ন রঞ্জন দে, সুব্রত গড়াই এবং শংকর দাসকে নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়। নেতৃত্ব দেন অস্থি বিশেষজ্ঞ প্রসন্ন রঞ্জন দে। তিনি জানিয়েছেন, খুব খারাপভাবে ভেঙেছিল হাড়টি। মূল্যবান প্লেট বসিয়ে কয়েক ঘন্টা ধরে অস্ত্রোপচার চলেছে। এটা না করলে ভেঙে থাকা ওই অংশের জন্যই মৃত্যুমুখে পতিত হতেন বৃদ্ধা। এখন তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন তিনি। এই প্রার্থনাই করছেন সকলে। অসহায় মানুষের ভরসারই তো জায়গা হাসপাতাল। নাম পরিচয়বিহীন অসহায় ভিক্ষাজীবী মানুষের জন্য হাসপাতাল বিশেষত চিকিৎসকদের এই চেষ্টা দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। লক্ষাধিক টাকার অস্ত্রোপচার হল বিনামূল্যেই। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিক চিকিৎসক সমাজ এমনটাই বলছেন সাধারণ মানুষ।